গীবত ও চোগলখোরী | প্রস্রাবের পর পবিত্রতা অর্জন।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা বর্ণনা করেন: একবার নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামদুটি কবরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বলেন, এই কবর দুটিতে আজাব হচ্ছে তবে বড় কোন অপরাধের কারণে আজাব হচ্ছে না বরং এমন সাধারণ বিষয়ের জন্য আজব হচ্ছে, যা থেকেতারা একটু চেষ্টা করলে বাঁচতে পারতো।
গীবত ও চোগলখোরী pdf গীবত ও চোগলখোরী নিয়ে উক্তি গীবত ও চোগলখোরী ধ্বংসলীলা চোগলখোর অর্থ কি গীবত কত প্রকার গীবত নিয়ে ইসলামিক উক্তি গীবত ও অপবাদ গীবত এর আরবি গীবত নিয়ে কোরআনের আয়াত গীবত কত প্রকার গীবত নিয়ে উক্তি গীবত সম্পর্কে কোরআন ও হাদিস গীবত নিয়ে কবিতা গীবতের গুনাহ মাফের উপায় গিবতের শাস্তি গীবত সম্পর্কে ঘটনা প্রসাব করে পানি না নিলে কি নামাজ হবে প্রসাবের পর পানি ব্যবহারের নিয়ম প্রস্রাবের পর দু’য়েক ফোঁটা চলে আসলে কি কাপড় নাপাক হয়ে যাবে প্রস্রাবের ফোটা পড়লে করণীয় পায়খানার পর ঢিলা ব্যবহারের নিয়ম প্রসাবের পর কুলুপ করার নিয়ম কাপড়ে প্রস্রাব লাগলে কিভাবে পাক হবে প্রস্রাব করলে কি ওযু ভেঙে যায়

আরো পড়ুন,

অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়ের গুনাহের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে বললেন, তাদের একজন পেশাব করার সময় পর্দা করত না আর একটি রেওয়াতে আসছে প্রসবের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতো না। আর দ্বিতীয় জন চুগল খড়ি করত অর্থাৎ একের কথা অন্যের কাছে বলে বেড়াতো।

এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম একটি তাজা ডাল চেয়ে নিলেন। এরপর ডালটির মাঝখানে চিরে দু টুকর ো দু কবরের উপর গেড়ে দিলেন। সাহাবাগণ আরজ করলেন, ইয়া রাসুল আল্লাহ! আপনি এমন কেন করলেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বললেন, হয়তো ডাল শুকানো পর্যন্ত তাদের কবরের আজাব হালকা করে দেয়া হবে। মিশকাত শরীফ।
আরো কিছু গুনাহের শাস্তি।

বুখারী শরীফের এক দীর্ঘ হাদিসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি স্বপ্নে বর্ণনা রয়েছে। সেখানে কবরের কিছু বিশেষ বিশেষ শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আজ রাতে আমি স্বপ্নে দেখতে পেলাম, দুজন লোক এসে আমার হাত ধরে আমাকে পবিত্র স্থানে দিকে নিয়ে চলল।

কিছু দূর যাওয়ার পর দেখলাম, একজন লোক বসে আছে এবং আরেকজন লোক তার নিকটে দাঁড়িয়ে আছে। দন্ডায়মান লোকটির হাতে সাঁড়াশি রয়েছে। সে ওই সাঁড়াশি ঢুকে বসে থাকার লোকটির চলে মাথার পিছন পর্যন্ত কেটে ফেলেছে।

আবার অন্যদিক দিয়েও অনুরূপ করে। এক দিক কাটার পর যখন অন্য দিক কাটতে যায়, তখন প্রথম দি ক জোড়া লেগে ভালো হয়ে যায়। আবার ওই রূপ কাটে, আবার ওই রূপ জোড়া লেগে যায়। আমি এ অবস্থা দেখে অত্যন্ত ভীত হয়ে সঙ্গীদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম, বন্ধুগণ! ব্যাপার কি? তারা বললেন, সামনে চলুন। হলে আমরা সামনের দিকে চললাম।

কিছুদুর যাওয়ার পর দেখলাম, একজন লোক এক খানা ভারী পাথর হাতে নিয়ে তার নিকট দাঁড়িয়ে আছে। দন্ডায়মান লোকটি ওই পাথর দিয়ে স্থায়িত্ব ব্যক্তির মাথায় আঘাত করে চূর্ণ-বিচূর্ণ করছে। যখন সে তার মাথায় পাথর নিক্ষেপ করে তখন জোরে আঘাত হানার পর পাথর দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ে।

লোকটি নিক্ষিপ্ত পাথর পুড়িয়ে আনার আগেই মাথা ছিন্নভিন্ন টুকরা গুলো জোড়া লেগে আগের মত হয়ে যায়। সে ওই পাথর কুড়িয়ে এনে আবার মাথায় আঘাত করে এবং মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেলে। এভাবে সে বারবার আঘাত করতে থাকে। এই ভয়ান ক দৃশ্য দেখে আমি অত্যন্ত ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে সঙ্গীদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম, এ কি কাণ্ড? সে আমার কথার কোন উত্তর না দিয়ে বললেন, সামনে চলুন। আমরা সামনে চলতে আরম্ভ করলাম।

কিছু দুর যাওয়ার পর একটি বিরাট গর্ত দেখতে পেলাম। গর্তটির মুখ সরু, কিন্তু ভেতরটা অত্যন্ত গভীর ও প্রশস্ত, যেন একটি তন্দুর। তার ভেতরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে আর বহু উলঙ্গ নারী-পুরুষ সেখানে অবস্থান করছে।

আগুনের তেজ এতো বেশি যে, আগুন যেন ঢেউ খেলছে। ঢেউয়ের সাথে যখন আগুন উপরে উঠে আছে, তখন লোকগুলো গর্তের মুখে এসে গর্ত থেকে বের হওয়ার উপক্রম হয়। আবার যখন আগুন নিচে নেমে যায় তখন লোক গুলো আগুনের সাথে সাথে নিচে নেমে যায়। আমি খুব ভয় পেয়ে সঙ্গীদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম।

বন্ধুগণ ব্যাপার কি? তোরা আমার প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে বললেন, সামনে চলুন। আমরা সম্মুখে অগ্রসর হতেই লাগলাম ‌। কিছুদূর যাওয়ার পর একটি রক্তের নদী নিকট পৌঁছলাম। নদীর মাঝখানে এক লোক দাঁড়িয়ে আছে। আর নদীর তীরে আরেকটি লোক দাঁড়িয়ে আছে। লোকটির সামনে কতগুলো পাথর পড়ে আছে।

নদীর মাঝে লোকটি যখন ফুলের দিকে আসার চেষ্টা করে, তখনই তীরের দাড়ানো লোকটি তার মুখে জোরে পাথর মেরে নদীর মাঝখানে দিকে হটিয়ে দেয়। এভাবে যখনই সে তীরের দিকে আসার চেষ্টা করে, তখনই তীরের লোকটি পাথর মেরে তাকে দূরে সরিয়ে দেই। এই নিষ্ঠুর ব্যবহার দেখে, খুব ভীত হয়ে সংগীতে জিজ্ঞাসা করলাম, বন্ধুগণ বলুন, একই ব্যাপার।

আমরা সামনে অগ্রসর হতেই লাগলাম। কিছু দূর যাওয়ার পর দেখি একটি সুন্দর সবুজ শ্যামল বাগান। বাগানের মাঝখানে অনেক উঁচু একটি বৃক্ষ। তার নিচে একজন বৃদ্ধ লোক বসে আছে। বৃদ্ধের চারপাশে অনেক বালক বালিকা। বৃক্ষটির কাছে আরো একজন লোক বসা আছে। তার সামনে আগুন জ্বলছে। লোকটি আগুনের তাপ আরো বৃদ্ধি করছে।

সঙ্গীরা আমাকে সেই বৃক্ষের উপর নিয়ে গেলেন। বীরক্ষতির ওপর একটি মরোম বালা খানা দেখতে পেলাম। তারা আমাকে একাই ঘরে প্রবেশ করালেন। এমন সুন্দরও নয়ন জুড়ানো বালাখানা ইতিপূর্বে আর কখনো দেখিনি। বালাখানার ভেতরে নারী-পুরুষ, যুবক বৃদ্ধ ও বাল ক বালিকা সব শ্রেণীর লোক রয়েছে।

বালাখানা থেকে বের হয়ে আসার পর সঙ্গীরা আমাকে আরো উপরে নিয়ে গেলেন। সেখানে প্রথম টার চেয়ে উন্নত একটি বালাখানা দেখতে পেলাম। সেখানে ছিল শুধু বৃদ্ধ ও নওজোয়ান। আমি সংগীতের বললাম, আপনারা আমাকে সারারাত বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করিয়া আনলেন, এবার দয়া করে বলুন, ওইসব ঘটনার কি রহস্য ছিল? সঙ্গীরা বললেন।

প্রথম যে লোকটির মস্তক ছেদন করা হচ্ছে দেখেছেন তার মিথ্যা বলার অভ্যাস ছিল। তারা মিথ্যা কথা দুনিয়াতে মসহুর হয়ে গিয়েছিল তাই কিয়ামত পর্যন্ত তার সাথে উক্ত আচরণ করা হবে।

দ্বিতীয় ,যে লোকটির মস্ত ক পাথরের আঘাতে আঘাতে চূর্ণ-বিচূর্ণ করতে দেখেছেন, আল্লাহ তাআলা তাকে কুরআনের ইলম দান করেছিলেন। কিন্তু সেই লোম থেকে গাফেল হয়ে রাত্রে ঘুমিয়ে থাকতো এবং দিনে সে অনুযায়ী আমল করত না কেয়ামতের দিন হিসাব নিকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত তার এইরূপ আজাব চলতে থাকবে।

তৃতীয় আপনি তাদেরকে আগুনের তন্দুরের ভিতর দেখেছেন, তারা দুনিয়াতে ব্যভিচারে লিপ্ত ছিল। কেয়ামত পর্যন্ত তাদের উপরে শাস্ত্রী চলতে থাকবে।

চতুর্থ যে ব্যাক্তি রক্তের নদীতে হাবুডুবু খেতে দেখেছেন, সে সুট খেত। নাউজুবিল্লাহ বৃক্ষের নিচে যে বৃদ্ধ কে দেখেছেন, তিনি হযরত ইব্রাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লাম। বাচ্চাগুলো হলো মানুষের নাবালক ছেলে মেয়ে। আর যিনি আগুন জ্বালিয়েছিলেন, তিনি হলেন জাহান্নামের দারোগা মালিক ফেরেশতা।

আপনি প্রথম যে বালাখানায় প্রবেশ করেছেন, তা সাধারণ ঈমানদারদের আর দ্বিতীয়টি শহীদদের। আমি হলাম জিব্রাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফেরেস্তা এবং ইনি মিকাইল আলাইহিস সাল্লাম ফেরেশতা।এরপর জিব্রাইল আমাকে বললেন, এখন আপনি উপরের দিকে তাকান। আমি উপরের দিকে দৃষ্টিপাত করে এক খন্ড সাদা মেঘ দেখলাম। জিব্রাইল বললেন, ওইটাই হলো আপনার বালাখানা।

আমি বললাম, আমাকে ছেড়ে দিন, আমি আমার বালাখানায় চলে যেতে চাই। জিবরাঈল আলাইহিস সালাম বললেন, আপনার সময় এখনো পূর্ণ হয়নি, আপনার দুনিয়ার হায়াত বাকি আছে। যদি বয়স পূর্ণ হতো, তাহলে এখনি যেতে পারতেন। মিশকাত শরীফ।

ফায়দা: নবীদের স্বপ্নেও ওহী। তাই উপরে বর্ণিত সমস্ত ঘটনা সম্পূর্ণ সত্য এবং তা থেকে কয়েকটি বিষয় জানা গেল।
  • প্রথম: মিথ্যার ভয়াবহ শাস্তি।
  • দ্বিতীয়: বেয়ামুল আলিমের পরিণত।
  • তৃতীয়: জিনার প্রতিফল।
  • চতুর্থ: সুদখোরের ভীষণ আজাব।
আল্লাহ তাআলা সকল মুসলমানকে সব গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখুন, আমিন।ধন্যবাদ সবাইকে ধৈর্য সহকারে পোস্টটি পড়ার জন্য।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url