কবরের প্রথম রাত কেমন হবে | কবরের আজাব সম্পর্কে ঘটনা।
আসসালামু আলাইকুম, সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আপনারা আমার পোস্টের থাম্বেল দেখে বা পোস্টের টাইটেল দেখে বুঝে গেছেন যে আমি এই কনটেন্ট বা পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের কি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। মানুষের মৃত্যুর পরে মুমিন বান্দা এবং কাফেরদের জন্য যে অবস্থা হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তো কথা না বাড়িয়ে চলুন আমরা বিস্তারিত আলোচনার দিকে যাই।
হযরত বারা ইবনে আযেব (রাঃ) বর্ণনা করেন ঃ আমরা ( একবার ) নবী করিম সঃ সাথে এক আনসারীর জানাযা নিয়ে কবরস্থানে গিয়েছিলাম। যাওয়ার পর দেখি তখনও কবর তৈরি হয়নি। ফলে রাসুল বসে পড়লেন। আমরাও নিশ্চৃপ হয়ে অত্যান্ত আদবের সাথে নীরবে বসে পড়লাম যেন তার মাথার উপর পাখি বসে আছে।
আরো পড়ুন,
নবী করিম সঃ হাতে এক খন্ড কাঠ ছিল। তা দ্বারা তিনি মাটি খুড়ছিলেন। (যেমন গভীর চিন্তিত ব্যাক্তি করে থাকে)। কিছুক্ষন পর নবী করিম সঃ মাথা তুলে বললেন, তোমরা আল্লাহর কাছে কবর আযাব থেকে মুক্তি চাও। দু বার কিংবা তিনবার একই কথা তিনি উচ্চারন কবলেন।। অতঃপর বললেন, যখন মুমিন বান্দার দুনিয়া থেকে যাওয়ার সময় হয়, তখন আসমান থেকে ফেরেশতাগণ তার কাছে আগমন করেন।
তাদের মুখমন্ডল সূর্যের ন্যায় সাদা ও উজ্জ্বল এবং তাদের সাথে জান্নাতী কাফন ও সুগন্ধি থাকে। নেককার মুুমুর্ষ ব্যক্তির যতদূর দৃষ্টি যায়, ততদূর পর্যন্ত ফেরেশতাগণ সুশৃঙ্খলভাবে বসে পড়েন। অতঃপর মালাকূল মউত হযরত আজরাইল (আঃ) মুমূর্ষ ব্যক্তির শিয়রে বসে বলেন, হে পবিত্র আত্তা! আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা ও সন্তুষ্টির দিকে বের হয়ে আস। ফলে তার রুহ এমন সহজে বের হয়ে আসে, যেমন মশক থেকে পানি ফোটা বের হয়ে আসে।
মুহুর্তের মধ্যে বহুদূর পর্যন্ত অপেক্ষমান ফেরেশতাগণ রুহটি সেই ফেরেশতার হাতে থেকে নিয়ে কাফন পরিয়ে ও সুগন্ধি মেখে আকাশের দিকে ছুটে যান। উক্ত খুশবু সম্পর্কে নবী সঃ বলেন, পৃথিবীতে যতই ভাল খুশবু পাওয়া যাক না কেন সেই সুগন্ধি সঙ্গে তাদের তুলনা হবে না।
তারপর নবী সঃ ফেরেশতাগণ রুহুটি নিয়ে আসমানে দিকে উঠতে থাকেন। বিভিন্ন আসমানে অন্য ফেরেশতাদের সাথে দেখা হলে তারা জিজ্ঞেস করেন, এই পবিত্র বুহুটি কার? তখন ফেরেশতাগণ তার সর্বোত্তম নাম উল্লেখ করে বলেন, ইনি অমুকের পুত্র অমুক। প্র
থম আসমানে বোঝার পর আসমানের দরজা খুলে দেওয়া হয়। তখন তারা রুহু নিয়ে উপরের দিকে চলে যান। এভাবে এক এক আসমান অতিক্রম করে সপ্তম আসমানে গিয়ে পৌঁছান। প্রত্যেক আসমানে ফেরেশতাগণ তাদেরকে পরবর্তী আসমানে পৌঁছে দিয়ে আসেন। সপ্ত ম আসমানে প্রচার পর আল্লাহ তায়ালা বলেন আমার এই বান্দার নাম ইলিনে জায়গায় যেখানে মুমিনের আমলনামা ও রুহু রাখা হয়।
সেখানে লিপিবদ্ধ করে তাকে দুনিয়াতে ফিরিয়ে নিয়ে যাও। কেননা আমি মানুষকে মাটি থেকেই সৃষ্টি করেছি এবং সেখানেই তাদেরকে ফিরিয়ে দেব আবার সেখান থেকেই তাদেরকে পুনরায় বের করব। আল্লাহ তাআলার নির্দেশে রুহুকে তার শরীরে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
অতঃপর দুইজন ফেরেশতা তার কবরে আছেন এবং তাকে বসিয়ে জিজ্ঞাসা করেন তোমার প্রতিপালক কে সে উত্তর দেই আমার প্রতিপালক আল্লাহ। পুনরায় তাকে জিজ্ঞেস করেন তোমার ধর্ম কি সে উত্তর দেয় আমার ধর্ম ইসলাম। পুনরায় তাকে জিজ্ঞাসা করেন এই লোকটিকে যাকে তোমার নিকট পাঠানো হয়েছিল সে উত্তর দেয়। ইনিরা আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
তারপর তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় তুমি দুনিয়া থেকে কি আমল নিয়ে এসেছো সে উত্তর দেয় আমি আল্লাহর কালাম পাঠ করেছি এবং আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি ও তার কথার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি। তখন একজন ঘোষণাকারী আসমান থেকে ঘোষণা দিয়ে বলেন আমার বান্দা সত্য বলেছে ।
অতএ ব তোমরা তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য জান্নাতের দিকে দরজা খুলে দাও। সুতরাং তার জন্য জান্নাতের দিকে দরজা খুলে দেওয়া হয়। সেই দরজা দিয়ে জান্নাত থেকে শান্তি ও সুঘ্রাণ আসতে থাকে এবং যতদূর দৃষ্টি যায় ততদূর পর্যন্ত তার কবরকে প্রশস্ত করে দেওয়া হয়।
অতঃপর সুন্দর পোশাক পরিহিত সুগন্ধময় ও অত্যন্ত সুন্দর চেহারার এক ব্যক্তি তার কাছে আছে এবং সুসংবাদ জানিয়ে বলে এটা সেই দিন যা সম্পর্কে তোমাকে ওয়াদা করা হয়েছিল।
তার কথা শুনে মুমিন ব্যক্তি মুগ্ধ হয়ে বলবে আপনি কে আপনাকে খুবই সুন্দর দেখা যাচ্ছে। সত্যিই আপনার চেহারা কে চেহারা বলা যায় এবং আপনি সুসংবাদ দেওয়ার যোগ্য। সে উত্তর বলবে আমি আপনার নেক আমল। তখন সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে বলবে হে প্রতিপালক অতিসত্বর কেয়ামত কায়েম করো যেন আমি আমার পরিবার পরিজন ও ধন সম্পদের এবং জান্নাতের হুর গেলমান ও নিয়ামত সমূহের নিকট চলে যেতে পারি।
সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আপনারা পোস্টটি পড়ে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন যে মুমিন বান্দাদের সাথে কবরে কি সরোপ আচরণ করা হয়। আজকের মত আমি এখানেই সমাপ্তি করছি আপনাদের সাথে আবারো অন্য একটি হাদিস নিয়ে আলোচনা করা হবে সে প্রত্যাশা আপনারা ভালো থাকবেন আর আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনাদের কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন আল্লাহাফেজ।