খেসারি চাষ পদ্ধতি | খেসারি ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

খেসারি চাষে আজ কাল মানুষ বেসি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। কারণ বর্তমানে ডালের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বেড়ে চলেছে, তাই ডাল চাষ করে মানুষ বেশ লাভবান হয়ে থাকে। এই পোষ্ট এর মাধ্যমে আপনারা কি ভাবে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে ডাল চাষে লাভবান হওয়া যায় সে বিষষে আপনাদের জানাবো। অবশ্যই পোষ্টি শেষ থেকে শুরু পর্যন্ত পড়ে নিবেন।
বারি খেসারী ৩মাসকলাই চাষ পদ্ধতিমসুর চাষ পদ্ধতিখেসারি ডালের ছবিখেসারি কলাইখেসারি ভুসিখেসারি ডাল গাছবাংলাদেশে চাষকৃত ডাল ফসলের মধ্যে মাসকলাইয়ের স্থান কত তমখেসারি ডালের ক্ষতিকর দিকমাসকলাই ডালের উপকারিতামুগ ডালের উপকারিতাখেসারি ডালের ছবিখেসারি ডালের পুষ্টিগুণমসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতাখেসারি ডাল খেলে কি হয়খেসারি ডাল in english

ভূমিকাঃ- পূর্ণবয়স্ক পোকা ও কিড়া উভয় গুদামজাত ডালের ক্ষতি করে থাকে।

ক্ষতির নমুনাঃ- এই পোকা ডালের খোসারি ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে শ্বাস খেতে থাকে। ফলে দানা হালকা হয়ে যায়। এর ফলে বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় এবং খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।

খেসারি চাষ ব্যবস্থাপনাঃ

গুদামজাত করার আগে জানা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হয়। ডালের দানা শুকিয়ে পানির পরিমাণ ১২% এর নিচে আনতে হবে। বীজের জন্য টন প্রতি ৩০০ গ্রাম মেলাথিওন বা সেভেন ১০% গুড়া মিশিয়ে পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়। ফস্টক্সিন ট্যাবলেট দুটি বড়ি প্রতি ১00 কেজি গুদামজাত ডালে ব্যবহার করতে হবে। এই বড়ি আবদ্ধ পরিবেশে ব্যবহার করতে হয়।

আরো পড়ুন,

খেসারী জাত পরিচিতিঃ

বারি খেসারি জাত-১ঃ স্থানীয় জাতের তুলনায় ৪০% পর্যন্ত বেশি ফলন দেয়। এ জাতের গাছ গাড়ো সবুজ এবং প্রচুর শাখা-প্রশাখা হয়ে থাকে। বারি খেসারি ১ জাতের হাজার বীজের ওজন ৪৮ থেকে ৫২ গ্রাম। ফসল পাকতে ১২৫ থেকে ১৩০ দিন সময় লাগে। ফলন হেক্টর প্রতি এক থেকে দুই টন। এই জাত পাউডারী ও ডাউনি মিলডিউ রোগ প্রতিরোধে।

বারি খেসারি জাত-২ঃ এই জাতের গাছের উচ্চতা ৫৫ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। এই গাছের পাতা স্থানীয় জাতের তুলনায় অনেকটা বেশি চওড়া হয়ে থাকে। ফুলের রং নীল বর্ণের হয় এবং বীজ একটু বড় হাজার দানার ৫০ থেকে ৫৫ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। বীজের রং হালকা ধূসর ও আমিষের পরিমাণ ২৪ থেকে ২৬ পার্সেন্ট হয়। বীজ বপন থেকে ফসল পাকা পর্যন্ত ১২৫ ও ১৩০ দিন সময় লাগে এবং এর ফলন হেক্টর প্রতি ১ থেকে দুই মন পর্যন্ত হয়।

সার প্রয়োগ ও ব্যবস্থাপনাঃ

খেসারির রিলে ফসলের ক্ষেত্রে সারের প্রয়োজন তেমনি একটা হয় না। একক ফসলের জন্য অনুর্বর জমিতে হেক্টর প্রতি নিম্নরুপ হারে সার প্রয়োগ করা যেতে পারে। খেসারি রিলে সার প্রয়োগ ও ব্যবস্থাপনার নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
  • ইউরিয়া ৪০ থেকে ৪৫ কেজি।
  • টিএসপি ৮০ থেকে ৮৫ কেজি।
  • এমওপি ৩০ থেকে ৪০ কেজি।
  • জৈব সার বা অনুজীব সার পরিমাণ মতো দেওয়া যেতে পারে।
  • সার সেস চাষের সময় প্রয়োগ করা ভালো। আগে খেসারির চাষ না করা জমিতে আবাদের জন্য প্রতি কেজি বীজের সাথে ১০০ গ্রাম হারে অনুমোদিত অনুজীব স্যার প্রয়োগ করা যেতে পারে।

জমিতে বীজ বপন পদ্ধতিঃ

রিলে ফসলের ক্ষেত্রে আমন ধানের পরিপক্কতা কাল এবং জমির রসের পরিমাণের উপর খেসারি বীজ বপনের সময় নির্ভর করে। এক্ষেত্রে কার্তিক মাস থেকে মধ্য অগ্রহায়ণ অর্থাৎ মধ্য অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত বীজ বপন করা হয়। একক ফসলের জন্য মধ্য কার্তিক থেকে মধ্য অগ্রহায়ণ অর্থাৎ নভেম্বর মাসে ২০ বপন করা হয়ে থাকে।

রিলে ফসল হিসেবে চাষ করলে আমন ধান কাটার প্রায় একমাস আগে জমিতে পর্যাপ্ত রস থাকা অবস্থায় বহন করতে হবে। একক ফসল হিসেবেও বীজ ছিটিয়ে বপন করা যায়। তবে শারির ক্ষেত্রে বীজ বপণের শারির দূরত্ব ৫০ সেন্টিমিটার রাখা উচিত। প্রতি একরে ১৬ থেকে ১৮ কেজি বীজ লাগানো যেতে পারে তবে রিলে ফসলের ক্ষেত্রে বীজ এর পরিমাণ কিছু বেশি দিলেও সমস্যা হবে না।

রোগবালাই দমন ও ব্যবস্থাপনাঃ

রোগের নামঃ- খেসারির ডাউনি মিল্ড ইউ।
ক্ষতির নমনাঃ- রোগাক্রান্ত খেসারি গাছের পাতা কিছুটা হলদে হয়ে যায় এবং পাতার নিচে লক্ষ্য করলে ছত্রাকের অবস্থান খালি চোখেই দেখা যায়। রোগের মাত্রা বেশি হলে পাতা কুচকে ও ঝলসে যায়। এ ছত্রাকের জীবাণু মাটিতে এক থেকে দুই বছর বেঁচে থাকতে সক্ষম হয়।

রোগ নির্ণয় ও ব্যবস্থাপনাঃ

রোগ প্রতিরোধী জাত যেমন বারি খেসারী ১ এবং ২ চাষ করা হয়ে থাকে। রিডমিল এম জেড ০.২% ১২ দিন পরপর তিনবার স্প্রে ক করে এ রোগ দমন করা যেতে পারে।

উপযুক্ত জমি ও মাটি নির্বাচন এবং প্রস্তুতকরণঃ

খেসারী চাষের জন্য দোয়াস এবং এটেল দোয়াস মাটিতে খেসারি ভালো জন্মায়। খেসারি প্রধানত বোনা আমন ধান কাটার আগে রিলে ফসল হিসেবে আবাদ করা হয়। সেই জন্য জমি চাষের প্রয়োজন হয় না। একক ফসল হিসেবে আবাদের ক্ষেত্রে তিন থেকে চারটি চাস ও মই দিতে হবে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url