মিষ্টি বানানোর উপকরণ | ময়দা দিয়ে মিষ্টি বানানোর রেসিপি।

আসসালামু আলাইকুম আমার আজকের আয়োজন হচ্ছে নরম তুলতুলে রসগোল্লা। এই রসগোল্লাটা বানানো হয় কিভাবে তা বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি একদম দোকানের মতই। পারফেক্ট করে কিভাবে তৈরি করতে পারবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা। আর এই রেসিপিটি একটু বড় হওয়ার কারণে সবাইকে অনুরোধ করব আজকের এই রেসিপিটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য এবং পোস্টটি না টেনে সম্পূর্ণ করার অনুরোধ করা হলো।
একদম দোকানের মত নরম পারফেক্ট টোল তুলে রসগোল্লা তৈরিতে আমি স্টেপ বাই স্টেপ সমস্ত টিপস শেয়ার করেছি। কনটেন্ট বা পোস্টটি যদি আপনারা বাদ দিয়ে বা টেনে পড়েন তাহলে বুঝতে পারবেন না যেকোনো মিষ্টি তৈরিতে ছানাটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছানাটা যদি আপনি পারফেক্ট ভাবে তৈরি করতে পারেন সেক্ষেত্রে মিশ্রিত কিন্তু খুব সুস্বাদু এবং নরম তুলতুলে হবে।

মিষ্টির ছানাসহ রসগোল্লা কিভাবে বানাবেন সব বিষয় নিয়ে এই কনটেন্ট বা পোস্টে স্টেপ বাই স্টেপ তুলে ধরা হলো। আশা করছি এই রসগোল্লা বানানোর জন্য যেসব টিপসগুলো রয়েছে সেগুলো পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়ি আমরা চলে যাই কিভাবে বাসায় নরম তুলতুলে রসগোল্লা বানাবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।

আরো পড়ুন

প্রথমেই আমি বল নিচ্ছি তবে একটি পারফে ক্ট ছানা তৈরি করবেন। প্রথমে আমি বলবো দুধ থেকে যে ছানাটি তৈরি করা হয় সেটি ভিনেগার দিয়ে পরিষ্কার করে নেব। আপনারা চাইলেও ভিনেগার ছাড়া লেবুর রস বা টক দই দিয়েও ছানাটি ভালোভাবে কেটে নিতে পারেন।

প্রথমেই নিয়ে নেব নরমাল ১/৩ কাপ পানি। ভিনেগার ১/৩ কাপ এরপরে ভিনেগার এবং পানি ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে একটি বাটিতে রেখে দিতে হবে। ছানা তৈরি করার জন্য এক্সট্রা ফ্যাক্ট হিসেবে বাটার নিয়ে নেব।
এখানে বলে রাখি বাটার এর পরিবর্তে আপনারা চাইলে ঘি অথবা অন্যান্য লিকুইড ব্যবহার করতে পারেন। পারফেক্ট ছানা তৈরি করার জন্য এই স্টেপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ আপনি যে পদ্ধতিতেই ছানাটি কেটে নেন না কেন, ছানাটি কেটে নেওয়ার সময় বাটার ঘি অথবা অন্যান্য লিকুইড নিবেন এর মধ্য থেকে যেকোনো একটি ব্যবহার করতে হবে। ২/৩ লিটার দুধের জন্য এছাড়াটি তৈরি করব।

এরপরে ছানাটি কেটে নেওয়ার পর যেহেতু খুব একটা সময় থাকে না সঙ্গে সঙ্গে ছানা থেকে পানিটি ঝরিয়ে নিতে হয় সেই জন্য আগে থেকেই একটি পাত্র রেডি রাখতে হবে আর এই পাত্রর উপরে একটি পাতলা আবরণ কাপড় অথবা ছাকনা দিয়ে তৈরি করে নিতে হবে।

এরপরে সামান্য পরিমাণে পানি দিয়ে ছাকনা অথবা কাপড় টিকে হালকা ভিজিয়ে রাখতে হবে যাতে করে আমরা ছানাটির পানির ছড়াবো সেজন্য খুব সহজেই ছানার পানি যাতে ঝরে যায়। আমি আগেই বলেছি আড়াই লিটার দুধ দিয়ে এই ছানাটি তৈরি করব। ছানাটি তৈরি করার জন্য অবশ্যই ফুল ফ্যাক ্ট বা অন্যান্য ক্রিম মুক্ত দুধগুলো নিতে হবে।

আপনারা যদি কম দুধ দিয়ে ছানা তৈরি করতে চান তাহলে উপরের উপকরণগুলো পরিমাণ মতো নিয়ে নিবেন অর্থাৎ কমবেশি করে নিবেন। আড়াই লিটার দুধ নেওয়ার পর চুলোয় দিয়ে গরম করে নিতে হবে অর্থাৎ চুলের আগুনের তাপমাত্রা যাতে মিডিয়াম পর্যায়ে থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

এখন অনবরত দুধটাকে নেড়েচেড়ে আড়াই থেকে তিন মিনিট মতো গরম করে নিব। খুব একটি সময় নিয়ে দুধটাকে গরম করতে হবে না। তিন থেকে চার মিনিট দুধ টাকে গরম করে নেওয়ার পর দুই টেবিল পরিমাণ বাটার নিয়ে নিবেন। দুধে বাটার মেশানোর পরে দুই থেকে তিন মিনিট আবারো গরম করে নিতে হবে। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে গরম করার সময় দুধ টিকে নাড়াচড়া দিয়ে নিতে হবে তা না হলে দুধগুলো পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

এরপরে দুধের মধ্যে দিতে হবে সিরকা। অবশ্যই দুধের শেরকান মেশানোর সময় চুলোর জাল টা মিডিয়াম পর্যায়ে রাখতে হবে। তবে উল্লেখ্য করা যায় যে সিরকা গুলো পুরোটাই না দিয়ে হালকা হালকা ভাবে দিলেই সবচেয়ে ভালো হবে। এরপরে একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে দুধগুলো আস্তে আস্তে ছানার রূপ নিতে শুরু করেছে।
যখন ছানাগুলো পানি থেকে আলাদা হয়ে যাবে এবং পানির রং হালকা সবুজ হয়ে যাবে তখন আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার ছানাটি পুরোপুরি ভাবে তৈরি হয়ে গেছে। এরপরে আপনি চুলার আগুন বন্ধ করে দিয়ে সারাটি ছেঁকে নিতে পারেন। আপনার সারাটি যখন পুরোপুরি ভাবে ছেঁকে নেওয়ার শেষ হয়ে যাবে তখন হালকা ঠান্ডা পানি দিয়ে ছানাগুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

এখানে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে ছানাগুলো যদি ভালোভাবে না ধুয়ে নেয়া হয় তাহলে ছানার ভিতরে যে এক্সট্রা ভাব থাকবে সেই ক্ষেত্রে ছানাটি পুরোপুরি নরম না হওয়া সম্ভব না থাকবে। ছানাগুলোকে পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়ার কারণে জানার যে ট ক একটি ভাব থাকবে সে ভাবটি নিমিষেই দূর হয়ে যাবে।

আপনার যখন ছানাগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়ার শেষ হয়ে যাবে এরপর আপনি ছানাগুলোকে একটি উঁচু জায়গায় অর্থাৎ কোন খুঁটির সাহস্যে নিয়ে সেগুলোকে আটকে দিয়ে রাখতে হবে দুই থেকে তিন ঘন্টা যাতে করে সম্পূর্ণ পানি গুলো ছানা থেকে দূরে সরে যায়।
এ পর্যায়ে আমাদের মিষ্টি তৈরি করার পালা। এইজন্য আপনাকে যে কাজটি করতে হবে আপনি প্রথমে একটি চুলার উপরে পাত্র বসে নিবেন। এরপরে আপনি ৮ কাপ পানি নিয়ে নিবেন। আট কাপ পানির জন্য দুই কাপ সমপরিমাণ চিনি দিয়ে নিবেন। চিনি গুলো পানিতে দেওয়ার পর medium পর্যায়ে চুলার জাল রেখে হালকা ভাবে নেড়েচেড়ে যতক্ষণ না পর্যন্ত পানিগুলো গারো পাতলা আবরণ না তৈরি হয় ততক্ষণ পর্যন্ত নাড়তে হবে।

আপনার যদি মিষ্টির জন্য পাতলা রস তৈরি করা শেষ হয়ে যায় এ পর্যায়ে আপনাকে ছানাগুলো নিয়ে মিষ্টি তৈরি করে নিতে হবে। মিষ্টি তৈরি করার জন্য আলাদা তিনটি উপকরণের প্রয়োজন হতে পারে। পরিমাণ মতো ময়দা, চিনি এবং পরিমাণ মতো ব্রেকিং পাউডার।

আপনি যখন ছানা দিয়ে মিষ্টি তৈরি করবেন তখন লক্ষ্য করবেন যে ছানাগুলো এতটাই নরম হয়ে থাকে যাতে হাতের তালুতে নিয়ে মিষ্টির আকার অর্থাৎ মিষ্টি যে রূপ গোলাকার হয়ে থাকে সেই রকম ভাবে নাড়াচাড়া করলেই ছানাগুলো মিষ্টির আকার ধারণ করবে। এভাবে যদি আপনি ছানাগুলো তৈরি করেন তাহলে বৃষ্টি তৈরি করার জন্য খুব একটা বেশি সময় আপনাকে নিতে হবে না।
সম্মানিত মা ও বোনেরা আপনারা বাসায় বসে নিশ্চিন্ত তৈরি করার কথা ভাবছেন তাহলে আমি যে উপরে উপকরণগুলো বা যে টিপস গুলো শেয়ার করলাম বা আলোচনা করেছি সেই ভাবে আপনারা বাসায় ছানা তৈরি করলে অবশ্যই আমার মত ছানা তৈরি করতে পারবেন।

ছানাগুলো দিয়ে মিষ্টি করার সময় কিছু টিপস বা কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে সেগুলো হল যখন আপনি ছানাগুলো নাড়াচাড়া করে বা ময়দা গুলোকেও একসাথে দিয়ে যখন নাড়াচাড়া করে মিষ্টির আকার ধারণ করবে সে সময় একটু লক্ষ্য করবেন যে প্লেটে বা পাত্রে ময়দা গুলো তৈরি করেছেন সেই প্লেটে বা পাত্রের উপর মিষ্টির সাইজের মতো করে ছোট ছোট কেটে গোলাকার করে নেবেন।

সেখানে একটু লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন যে আপনার ময়দান টুকরোগুলো ফেটে যাচ্ছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। যদি আপনার মিষ্টি টুকরো গুলো ফেটে না যায় তাহলে বুঝতে পারবেন যে মিষ্টি তৈরির জন্য আপনার ময়দাগুলো পুরোপুরি ভাবে তৈরি করা হয়ে গেছে।

এরপরে আপনি যে কাজটি করবেন আপনার ময়দাগুলো বা ছানাগুলো যখন একসাথে মেখে টুকরো করার শেষ হয়ে যাবে সেখান থেকে একটি একটি করে ছানা বা ময়দা টুকরো গুলো নিয়ে দুই হাতে তালুতে মুসলিম ভাবে মেখে অর্থাৎ হালকা চাপ দিয়ে মিষ্টির গোলাকার রূপ ধারণ করতে হবে। মিষ্টিগুলো যখন দুই হাতে তালুতে গোলাকার রূপদানের সময় অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে মিষ্টিগুলো যাতে ফেটে না যায়। কেননা আপনি যখন মিষ্টিগুলো রসে দিয়ে দিবে তখন মিষ্টিগুলো বলে গিয়ে রসের সাথে মিশে যেতে পারে।
মিষ্টি গুলো যখন আপনার সবগুলোই বানানো শেষ হয়ে যাবে তখন সুগার সেরা অর্থাৎ আপনি আগে থেকে যে সব মিষ্টির জন্য সেরা তৈরি করে রেখেছিলেন সে সেরা গুলোতে দিয়ে দিতে হবে। মিষ্টিগুলো সেরাতে দিয়ে দেওয়ার পর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে চোরের জাল হাই করে জাল করে নিতে হবে।

এই পর্যায়ে আপনি 10 থেকে 15 মিনিট জাল করে নেওয়ার পর ঢাকনাটা খুলে আলতোভাবে নেড়েচেড়ে নিতে হবে। এরপরে মিষ্টি সেরা গুলোকে হালকা গাড়ো করার জন্য সামান্য পরিমাণ ময়দা নিয়ে পানি দিয়ে ভালোভাবে ফ্যাক্ট করে দিতে হবে যাতে করে কোন প্রকার ময়দাগুলো গোটা না থাকে।

এরপরে পানি মিশ্রিত ময়দা গুলো বৃষ্টির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে অর্থাৎ সেরা গুলোতেই ছেড়ে দিতে হবে। এখানে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন যে পানি মিশ্রিত ময়দা সেরাতে দেওয়ার পর যখন ঢাকনাটি দিয়ে ঢেকে দেবেন তখন হালকা ফেনা হয়ে যাবে। এভাবে আপনি ৩০ থেকে ৪০ মিনিট মিষ্টি গুলোকে জাল করে নেবেন। এরপরে একটি মিষ্টি তুলে ঠান্ডা পানিতে দিয়ে আপনি চেক করে নিতে পারেন যে মিষ্টি পানিতে ডুবে যাচ্ছে কিনা।

আপনার মিষ্টি যদি পানিতে ভালোভাবে ডুবে যায় তাহলে বুঝতে পারবেন আপনার মিষ্টি টি ভালোভাবে সেদ্ধ হয়ে গেছে আর যদি মিষ্টি না ডুবে যায় তাহলে বুঝতে হবে যে মিষ্টিগুলো এখনও কাঁচা রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে আপনাকে আরো কিছু সময় নিয়ে মিষ্টিগুলোকে জাল করে নিতে । এভাবে আপনি বাসায় খুব সহজে নরম তুলতুলে মিষ্টি রেসিপি তৈরি করতে পারেন।

সম্মানিত ভাই ও বোনেরা আপনারা আমার দেখানোর নিয়ম অনুযায়ী অথবা আমার টিপ স নিয়ম অনুযায়ী যদি মিষ্টি তৈরি করে থাকেন তাহলে অবশ্যই কিভাবে মিষ্টির রেসিপি তৈরি করতে হয় খুব সহজে জেনে গেছেন। আপনারা বাসায় মিষ্টির রেসিপি তৈরি করে কেমন লাগলো অবশ্যই আমাকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন এবং আমি এরকম রেসিপি সম্বন্ধে বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে থাকি অবশ্যই আমার পেজটিকে ফলো দিয়ে থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url