অতি ঘন পদ্ধতিতে আম চাষ | আম গাছের পরিচর্যা।

আসসালামু আলাইকুম আমি আজকে আম সম্পর্কে কিছু লিখব। আম চাষী ভাই যারা আম চাষ বাণিজ্যিক ভাবে বা বাসা বাড়ির আনাচে-কানাচে আমের গাছ লাগিয়ে থাকেন তাদের উদ্দেশ্যে আমার এই পোস্টটি লিখা। আপনারা অবশ্যই আমার এই পোস্টটিতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে বুঝতে পারবেন।
আম চারা রোপণ পদ্ধতি আম গাছ কোন মাটিতে ভালো হয়। আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি গাছের ট্রেনিং ও প্রুনিং আম গাছের বৈশিষ্ট্য ও উপকারিতা   বারি ৪ আম চাষ পদ্ধতি কোন প্রযুক্তিতে সারা বছর আমের ফলন সম্ভব ব্যাখ্যা কর মিয়াজাকি আম চাষ পদ্ধতি আম কোন পরিবেশে ভালো হয় আম গাছের পরিচর্যা কিভাবে আমের ভালো চারা বাছাই করা হয় আম গাছ কোন মাটিতে ভালো হয় আম গাছের পরিচর্যা pdf বারোমাসি আম গাছের পরিচর্যা আম গাছে স্প্রে করার নিয়ম আম গাছের কীটনাশক আম গাছে সার প্রয়োগের পরিমান বারি ৪ আম চাষ পদ্ধতি আম গাছে হরমোন প্রয়োগ

আম চাষের জন্য আপনাদের করণীয় কি কি এবং বিভিন্ন রোগবালাই থেকে আমি গাছে রক্ষা করবেন কিভাবে তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় ফিরে যায়।

সুচিপত্রঃ

  • আম চারা রোপণ পদ্ধতি।
  • আম গাছ কোন মাটিতে ভালো হয়।
  • আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি।
  • গাছের ট্রেনিং ও প্রুনিং।
  • কোন আম সবচেয়ে আগে পাকে।
মাটির গভীরতা সুনিস্কাসিত, উর্বর দোয়াশ মাটি আম চাষের জন্য উত্তম। উঁচু ও মাঝারি উচু জমি নির্বাচন করতে হবে আম চাষের জন্য তাহলে ভালো একটি ফলাফল পাওয়া যাবে।

আম চারা রোপণ পদ্ধতি।

সমতল ভূমিতে বর্গাকার আয়তাকার পাহাড়ি ভূমিতে চারা গাছ লাগানো উত্তম। এক বছর বয়স্ক সুস্থ সবল ও রোগমুক্ত কলমে চারা রোপণ করাটাই ভালো হবে।

চারা রোপনের উপযুক্ত সময়ঃ

জ্যৈষ্ঠ থেকে আসার অর্থাৎ মধ্যমিং থেকে মধ্য জুলাই এবং ভাদ্র থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত আমি চারা লাগানোর উপযুক্ত সময় বলে বিবেচিত করা হয়। চারা রোপনের দূরত্ব দিকেও খেয়াল রাখতে হবে যাতে প্রতিটি যারা দ্রুত ৮ থেকে ১০ মিটার হয়ে থাকে।

আরো পড়ুন,

আম গাছ কোন মাটিতে ভালো হয়।

গর্তের আকার ১ মিলিমিটার থেকে এক মিলিমিটার চতুর সাইডে গর্ত করতে হবে।

আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি।

চারা গাছ লাগানোর জন্য গর্তে যে স্যার ব্যবহার করা হয় তারপর পরিমাণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো। স্যারের নাম ও গর্তের স্যারের পরিমাণ।
  • জৈব সার ১৮ থেকে ২২ কেজি।
  • ইউরিয়া সার ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম।
  • পিএসপি সার ৪৫০ থেকে ৫৫০ গ্রাম।
  • এম ওপি সার ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম।
  • জিপসাম ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম।
  • জিংক সালফেট ৪০ থেকে ৬০ গ্রাম।

চারা রোপণ পদ্ধতি।

গর্ত ভর্তির ১০ থেকে ১৫ দিন পর চারার গোড়ার মাটির বলসহ গর্তের মাঝখানে সোজাভাবে লাগাতে হবে এবং চারা রোপনের পর পানি ও খুঁটি দিয়ে বেরা ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ

একটি পূর্ণ বয়স্ক ফল যুক্ত কাছে বছরে ৫০ কেজি যুব সার, ২ কেজি ইউরিয়া, এক কেজি টিএসপি, ৫০০ গ্রাম এমওপি, ৫০০ গ্রাম জিপসাম ও ২৫ গ্রাম জিংক সালফেট প্রয়োগ করতে হবে। উল্লেখিত স্যার দুই কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথমবার জৈষ্ঠ থেকে আসার অর্থাৎ মেয়ে থেকে মধ্য জুলাই মাসে এবং দুই বার আসিন মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য অক্টোবর মাসে প্রয়োগ করতে হবে।

সেচ প্রয়োগ পদ্ধতিঃ

চারা গাছের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য ঘন ঘন শেষ দিতে হবে এবং ফল যুক্ত গাছের বেলায় আমের মুকুল ফোটা শেষে একবার এবং ফল মটর দানার আকৃতি ধারণ পর্যায়ে আবারো একবার পানি সেচ পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে।

গাছের ট্রেনিং ও প্রুনিং।

গাছের প্রধান কান্ডটি যাতে সোজাভাবে এক থেকে 105 মিটার উঠে সেদিকে লক্ষ্য রেখে গাছের গোড়ার অপ্রয়োজনীয় শাখা প্রশাখা কেটে ফেলতে হবে।

গাছের মুকুল ভাঙ্গন পদ্ধতিঃ

কলমে গাছের বয়স চার বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মুকুল ভেঙ্গে দিতে হবে।

গাছের ফল সংগ্রহঃ

গাছে কিছু সংখ্যা আমের ভোটার নিচে ত্বক যখন সামান্য হলদা ব্রণ ধারণ করে অথবা আধা পাকা আম গাছ থেকে পড়া আরম্ভ করে তখনই আম গাছ থেকে আম সংগ্রহ করার উপযুক্ত সময় বলে বিবেচিত হবে। গাজ ঝাকি দিয়ে আম না পেরে ছোট গাছের ক্ষেত্রে হাত দিয়ে এবং বড় গাছের ক্ষেত্রে জালিযুক্ত মাছের কোটার সাহায্য আম সংগ্রহ করা ভালো বা উত্তম পদ্ধতি।

অন্যান্য পরিচর্যাঃ

আমির অ্যান্থা কনজ রোগের আক্রমণে গাছের পাতা, কান্ড, নকুল ও ফলের ধূসর বাদামী রং দাগ পড়ে যায়। এই রোগে আক্রান্ত মুকুল ঝরে পড়ে যায়। কুয়াশা মেঘাচ্ছন্ন ও ভিজা আবহাওয়া এ রোগ ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে এবং সমস্ত মুকুল ঝরে যায়।

প্রতিকার সমূহঃ

আমের মৌসুমের শেষে গাছের মরা ডালপালা কেটে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। কাঁটা অংশের বর্দ পেস্ট প্রতি লিটার পানিতে আমে 100 গ্রাম তুঁতে ও 100 গ্রাম চুন প্রয়োগ করতে হবে।

গাছের মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার পূর্বে ই তিল ্ড ২৫০ এসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলিমিটার অথবা ডাইথেম এম ৪৫, ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। আমের আকার মটর দানা মত হলে দুইবার স্প্রে করতে হবে।

আমি এর মুখগুলির পাউডারি মিল্ড ইউ রোগ দমন করতে হবে। ওইডিয়াম মাঙ্গি ফেরি নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়। আমের মুকুলে সাদা পাউডার এর মত আবরণ দেখা যায় এ রোগে আক্রমণের মুকুল ঝরে যায়। আক্রান্তময় আমের চামড়া খসখসে হয় এবং কুচকে যায়। আমের দাম অনেক কম হয়ে থাকে। মেঘলা দিনে বাতাসের মাধ্যমে এরূপ বেশি বিস্তার করতে পারে।

অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহারঃ

আমের পরিপক্কতা সনাক্তকরণ করতে হবে গবেষণার মাধ্যমে কয়েকটি উন্নত জাতের আমের পরিপক্কতা নির্দেশক নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব নির্দেশক দেখে আম সংগ্রহ করলে আমের গুণগত মান ভালো থাকে এবং দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। এতে পরিবহনে অপচয় কম হয়। কিছু উন্নত জাতের আমের পরিকল্পতার নির্দেশক ও সংগ্রহের সময় নিচে উল্লেখ করা হলো।

কোন আম সবচেয়ে আগে পাকে।

আমি জাত পরিপক্কতার সময় কার গুটি ধরার পর থেকে পরিপক্কতা নির্দেশক ঘনত্ব লবনের দ্রবনে ডুবে যাবে, লবণে দ্রবণ ভাসবে।

গোপাল ভোগ ৮৪ থেকে ৯১ দিন বা ১ থেকে ৪% এরও বেশি।
ক্ষিরসা পাত ৮৭ থেকে ৯৫ দিন বা এক থেকে চার পার্সেন্ট এর বেশি।
ল্যাংড়া 97 থেকে ১০৫ দিন বা এক থেকে তিন এরও বেশি।
ফজলি ১১২ থেকে ১২০ দিন বা এক থেকে তিন এর বেশি।
বোম্বাই ৯৮ থেকে ১০৫ দিন বা এক থেকে দুই এর বেশি।
আসিন 149 থেকে ১৪৬ দিন বা এক থেকে দুই এর বেশি।

অন্যান্য তথ্যঃ

খোশাররাম ভোটার নিচে ত্বক সামান্য হলদে শ্বাসের রঙ হালকা হলে এবং পানিতে ছাড়লে ডুবে যাবে।

শেষ কথা, সম্মানিত আম চাষি ভাইয়েরা আপনারা আমার এই পোস্টটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন যে আধুনিক পদ্ধতিতে কিভাবে আম চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। আপনি এই পোস্টটি পড়ে কি মন্তব্যে পৌঁছেছেন অবশ্যই আমাকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন আল্লাহ হাফেজ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url