আধুনিক পদ্ধতিতে ছাগল পালন | কোন জাতের ছাগল পালনে লাভ বেশি।

আসসালামু আলাইকুম সম্মানিত খামারি ভাই ও বোনেরা যারা স্বল্প পুঁজি ব্যবহার করে উন্নত মানের ছাগল পালনে আগ্রহে তারা অবশ্যই আমারে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। আমি বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে কিভাবে ছাগল পালন করে লাভবান হওয়া যায় সেই সম্পর্কে আজকের এই পোস্টটি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি।
কোন জাতের ছাগল সবচেয়ে বড় হয়ছাগলের জাত চেনার উপায়ছাগল পালনে লাভ ক্ষতির হিসাবছাগলের জাতের নাম ও ছবিউন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায়১০ টি ছাগল পালনউন্নত জাতের ছাগলের বাচ্চার দামউন্নত জাতের ছাগলের ছবিকোন জাতের ছাগল পালনে লাভ বেশি১০০ ছাগল পালনখাসি ছাগল পালন পদ্ধতিছাগল পালন ট্রেনিংঘাস ছাড়া ছাগল পালন পদ্ধতিছাগল পালন প্রশিক্ষণ pdfছাগল পালন পদ্ধতি বইব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন pdf


দেশি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল খামার স্থাপনের উন্নত গুণাগুণ ও কলা কৌশল নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন রয়েছে। লাভজনক ব্লাক বেঙ্গল ছাগলের খামার স্থাপনের উৎপাদন বৈশিষ্ট্য অনবরত গুণাগুণ সম্পন্নভাবে ছাগীও পাঁঠা সংগ্রহ একটি মূল দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত হয়। মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন প্রকার বা বিভিন্ন বয়সী ছাগী বা পাঠা নির্বাচন সফলভাবে পালনের জন্য প্রযুক্তিগত ও তথ্যাদি সরবরাহ করা অধিক অত্যাবশক।

ছাগল পালন প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্যের সংক্ষিপ্ত ভূমিকাঃ

বাংলাদেশে বর্তমানে বাণিজ্যিক ছাগল প্রজনন খামার না থাকায় মাঠ পর্যায় হতে ছাগল সংগ্রহ করে আনতে হবে। মাঠ পর্যায়ে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল বাচ্চা ও দুধ উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যমান। উক্ত ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বংশ অথবা পরিবেশগত কারণ বা স্বতন্ত্র উৎপাদন দক্ষতার জন্য হতে পারে। সেই প্রেক্ষাপটে ব্লাক বেঙ্গল ছাগল খামার প্রতিষ্ঠানের জন্য বংশ বিবরণের ভিত্তি বজায় ও নিজস্ব উৎপাদন পুনরুতপাদন বৈশিষ্ট্য র গুণাবলীর ভিত্তিতে বাছাই বিবেচনা রেখে ছাগল নির্বাচন করা যেতে পারে।

আরো পড়ুন,

বংশ বিবরণের ভিত্তিতে বাছাই মাঠ পর্যায়ে বংশ বিবরণ পাওয়া দূরহ ব্যাপার। কারণ খামারিরা ছাগলের বংশ বিবরণ লিখিত আকারে সংরক্ষণ করে না বিধায় তাদের সাথে আলোচনা করে একটি ছাগিভা পাঁঠার বংশের উৎপাদন ও পুনরুৎপাদন দক্ষতা সম্বন্ধে ধারণা নেওয়া যেতে পারে বলে আশা করা যায়। ছাদের প্রতি বরের বাচ্চার সংখ্যা দৈনিক দুধ উৎপাদন প্রাপ্তির বয়স বাচ্চা জন্মের ওজন ইত্যাদি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়ে থাকে।

পাঠা নির্বাচনের ক্ষেত্রে পাঁঠার মা দাদি তথাবালের উপর নির্ভর করা যেতে পারে। একটি উন্নত জাতের ব্লাড বেঙ্গল ছাগি বা পাঁঠার বংশীয় গুনাগুন বিভিন্ন ভাবে হওয়া প্রয়োজন।

নিজস্ব উৎপাদন পুনরুতপাদন বৈশিষ্ট্য বলির ভিত্তিতে বাছাই এক্ষেত্রে দুটি বিশেষ বিবেচনা করা প্রয়োজন হয়ে থাকে। ছাগীও পাঁঠার উৎপাদন এবং পুনরুৎপাদন বৈশিষ্ট্য বলি এদের দৈহিক বৈশিষ্ট্য বলি ইত্যাদি। পাঠান নির্বাচনের ক্ষেত্রে উৎপাদন এবং পুনরুতপাদন বৈশিষ্ট্য বলি তার মা, দাদী, নানীর গুণাগুণ এর উপর নির্ভর করবে। তবে পাঠার দৈহিক বৈশিষ্ট্য বলির বিবেচনায় নির্বাচন করা যেতে পারে। সাক্ষী নির্বাচনের উৎপাদন ও পুনরুৎপাদন বৈশিষ্ট্য বলে বিভিন্ন রূপ হতে হবে।

ছাগির উৎপাদন ও পুন উৎপাদনের বৈশিষ্ট্যবলিঃ

  • ছাগী উৎপাদনে ঘনঘন বাচ্চা দেওয়ার ক্ষমতা বছরে কমপক্ষে দুইবার এবং প্রতিবার কমপক্ষে দুইটি বাচ্চা ন্যূনতম দৈহিক দুধ উৎপাদন ৬০০ মিলিমিটার‌
  • প্রতিটি বাচ্চা জন্মের ওজন ন্যূনতম এক কেজি।
  • বয়ো প্রাপ্তির বয়স মিনিমাম চার থেকে পাঁচ মাস।
  • বয় প্রাপ্তির দৈহিক ওজন ১০ কেজি।
  • দুগ্ধ প্রদানকাল তিন মাস।

ছাগী নির্বাচন প্রক্রিয়াঃ

লাভস জনক ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল খামার প্রতিষ্ঠার জন্য সারণি ১ এ উল্লেখিত জাতের ছাগে নির্বাচনের ক্ষেত্রে দৈহিক যে সমস্যা ও গুণাবলী বিবেচনায় প্রয়োজন তা নিম্নরূপ আলোচনার মাধ্যমে প্রকাশ করা হলো।
বিভিন্ন বয়সের দৈহিক বৈশিষ্ট্যের তারতম হয় সে কারণে একটি ছাদের 6 থেকে 12 মাস এবং ১২ থেকে ২৪ মাস ও 24 মাসের উর্ধ্বে বয়সের দৈহিক বৈশিষ্ট্য বলি বিভিন্নভাবে তুলে ধরা যেতে পারে। যেমন, উন্নত মানের গুনাগুন সম্মিলিত একটি ছাগলের নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য বলে থাকা প্রয়োজন।
  • মাথা চওড়া ও ছোট হতে হবে।
  • দৈহিক গঠন শারীর িক কৌণিক এবং অপ্রয়োজনীয় বেশি মুক্ত হতে হবে।
  • বুক ও পেট বুক ের বের গভীর হতে হবে।
  • পাঁজরের হাড় চওড়া এবং দুইটি হাড়ের মাঝখানে কমপক্ষে এক আঙ্গুল ফাঁকা জায়গা থাকা বাঞ্জনীয়।
  • পোলানের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকতে হবে।
  • ওলানের ওয়ার্ডগুলো হবে আঙ্গুলের মত একই আকারে এবং সমান্তরাল ভাবে সাজানো।
  • দুধের শিরা উল্লেখযোগ্য ভাবে দেখা যাবে এরকম বিশিষ্ট ছাগল।
  • আকর্ষণীয় চেহারা ছাগল ছুলভ আকৃতি সামঞ্জস্যপূর্ণ ও নিখুঁত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ধারী হতে হবে।

পাঠা নির্বাচন ক্ষেত্রঃ

লাভজনক ব্লাক বেঙ্গল ছাগল খামারে প্রতিষ্ঠার জন্য উল্লেখিত জাতের পাঠা নির্বাচনের ক্ষেত্রে দৈহিক যে সমস্যা ও গুণাবলী বিবেচনা প্রয়োজন তা নিম্নরূপ আলোচনা করা হলো। যেমন বিভিন্ন বয়সের দৈহিক বৈশিষ্ট্যের তারতম্য হয়ে থাকে এবং উন্নত গুণাগুণ সম্বলিত একটি পাঁঠার নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য বলি থাকা বাঞ্জনীয় বা প্রয়োজন বলে মনে করা হয়।
  • চোখ পরিষ্কার বড় তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সম্পূর্ণরূপে হতে হবে।
  • ঘাড় খাটো ও মোটা থাকতে হবে।
  • বুক গভীর ও প্রশস্ত হতে হবে।
  • পিঠের আকার প্রশস্ত বিশিষ্ট হতে হবে।
  • লয়েন প্রশস্ত ও পুরু এবং রেম্প এর উপরিভাগের সমতল ও লম্বা থাকতে হবে।
  • পা সোজা খাটো এবং মোটা হবে বিশেষ করে পিছনের পাদদয় সুঠাম এবং শক্তিশালী হতে হবে যাতে একটি হতে অন্যটি বেশ পৃথক থাকবে।
  • অন্ডকোষ শরীরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ঝুলনও থাকবে।
  • বয়স অধিক বয়স্ক অর্থাৎ দুই বছর বয়সী পাঠান নির্বাচন করা যাবে না।

ছাগল পালনের সব ঋতুতেই এবং সংগ্রহ বাংলাদেশে ব্যবহার উপযোগী বলে বিবেচিত করা হয়। প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্কতা বিশেষ পরামর্শ প্রদান শুধুমাত্র উপর লিখিত বৈশিষ্ট্য বলির ওপর ভিত্তি করে ছাগল এবং পাঠা নির্বাচন করলে একটি খামার লাভবান হবে না। বরং উন্নত জাতের ছাগল নির্বাচন সহ খাদ্য ব্যবস্থাপনা এবং সর্বোপরি সুষ্ঠু খামার ব্যবস্থাপনা করা হলে লাভজনক খামার প্রতিষ্ঠা সম্ভব‌।

ধন্যবাদ সবাইকে আমার এই পোস্টটি এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য আশা করছি ছাগল পালনের বিশেষ যে ক্ষেত্রগুলো আছে আপনারা তা বুঝতে পেরেছেন। এবং কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এবং ছাগল পালনে কতটুকু লাভবান হওয়া যায় তা আপনারা এই পোষ্টের মাধ্যমে বুঝতে পেরেছেন, আল্লাহ হাফেজ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url