মাশরুম চাষের নিয়ম | মাশরুম চাষে আয় ব্যয় | মাশরুম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব ।

মাশরুম একটি পুষ্টিকর সবজি সাধারণত সবজির মতো মাশরুম মাটিতে জন্মায় না। এটি নিম্ন শ্রেণীর ছত্রাক জাতীয় পরজীবী উদ্ভিদ এবং জীবনধারণের জন্য এরা জৌবক বস্তু থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করে থাকে।
মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি মাশরুম চাষের ট্রেনিং কোথায় হয় মাশরুম চাষ pdf ওয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি মাশরুম বীজের দাম মাশরুম চাষ প্রশিক্ষণ অনলাইনে মাশরুম প্রশিক্ষণ মিল্কি মাশরুম চাষ পদ্ধতি মাশরুম চাষ pdf মাশরুম চাষ পদ্ধতি মাশরুম চাষ পদ্ধতি বাংলাদেশ মাশরুম চাষে আয় ব্যয় বাংলাদেশে মাশরুম চাষের সমস্যা মাশরুম চাষের প্রয়োজনীয়তা মাশরুম চাষের সম্ভাবনা ওয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি

আশির দশকের শুরুতে এদের পরীক্ষা মূলক ভাবে মাশরুম চাষ শুরু করা হয়। সেই সময় সাভারে অবস্থিত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আওতাধীন দুটি কালচার সেন্টার একটি মাশরুম স্পন সর্ব উৎপাদন স্থাপিত হয়। এবং উক্ত কেন্দ্রে উদ্যোগে আশেপাশে চাষীদের স্পন্স সরবরাহ ও মাশরুম উৎপাদন কারিগরি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে মাশরুম চাষ শুরু করা হয়। বর্তমানে সাভারে মাশরুম সেন্টার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মাশরুম উৎপাদন কার্যক্রম আরো বিস্তারিত কাজ করছে।

মাশরুমের পুষ্টিমূল্য নির্ধারণ বা মানঃ

  • খাদ্য হিসেবে মাশরুম অতুলনীয় এবং প্রাচীনকাল থেকে এটি পুষ্টি সমৃদ্ধ সুস্বাদু ও দামী খাবার হিসেবে বিবেচিত‌।
  • মাশরুম প্রোটিন সমৃদ্ধ সবজি তাই একে সবজি মাংস বলা হয়ে থাকে। প্রতি ১০০ গ্রামে শুকনো মাশরুম ২০ থেকে ৩০ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
  • মাশরুম ভিটামিন সি, বি কমপ্লেক্স, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস ও কম মাত্রায় ক্যালসিয়াম, লোহ ইত্যাদি রয়েছে। এতে লৌহ কম থাকতেও সহজলভ্য অবস্থায় থাকে বলে উক্ত রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বজায় রাখতে মাশরুম বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • মাশরুম খুব নিম্ন শক্তির সম্পন্ন খাবার এতে কোলেস্টেরল নেই তবে চর্বির পরিমাণ অত্যন্ত কম যেমন দুই থেকে আট পারসেন্ট কিন্তু শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড লিনোলইক রয়েছে।
  • মাশরুমের পরিমিত পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট ও যথেষ্ট আশ ৮ থেকে ১০% থাকে।
  • এতে স্টার্টস নেই শর্করা পরিমাণ কম বিধায় বহুমূত্র রোগীদের জন্য মাশরুম আদর্শ খাবার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।
  • কম চর্বি কোলেস্টরেল মুক্ত এবং লীননৈক এসিড সমৃদ্ধ হওয়ায় মাশরুম হৃদয় রোগীদের জন্য খুব উপকারী

আরো পড়ুন,

মাশরুমের ঔষধি গুনাগুন ও নানাবিধ ব্যবহারঃ

  • মাশরুম একটি জনপ্রিয় খাবার হিসেবে মানুষের মাঝে জায়গা করে নিয়েছে। যেমনটি দামে অনেক বেশি এবং এর উপকার ও গুনাগুন অনেক। নিচে কিছু মাশরুমের ওষুধে গুনাগুন ও নানাবিধ ব্যবহার আলোচনা করা হলো।
  • বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতে মাশরুমের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যেমন, বাত, ব্যথা, জন্ডিস, কিরমি, রক্ত বন্ধ হওয়া কাজে মাশরুম ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • মাশরুম রক্তচাপ কমায় এবং টিউমার কোষে বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে।
  • নিয়মিত মাশরুম থেকে শারীরিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায় যা রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি এবং সর্দি-কাশি দূর করে থাকে।
  • মাশরুম উচ্চ রক্তচাপ ও বহুমূত্র রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী।
  • মাশরুমে যথেষ্ট আস থাকা শরীর স্লিম রাখতে সহায়তা করে।
  • মাশরুমকষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করে এবং মাশরুম প্রোটিনের হজম ক্ষমতা শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ হওয়ায় রোগীদের জন্য সহজপাঠ এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাবার।
  • রং বোতলের কর্ক ছবির ফ্রেম ফুলদানি হিসেবে মাশরুম ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

মাশরুমের জাত নির্বাচন করাঃ

প্রকৃতিতে মাশরুমের কয়েক হাজার জাত রয়েছে এর মধ্যে ৮ থেকে ১০ টি জাতের বাণিজ্যিক চাষাবাদ হয়ে থাকে। বাংলাদেশের তাপমাত্রা ও আপেক্ষিক আর্দ্রতা মাশরুম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী বলে মনে করা হয়। বাংলাদেশের চাষ উপযোগী মাশরুমে জাত গুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো।
  • ঝিনুক মাশরুম।
  • কান মাশরুম।
  • বোতাম মাশরুম।
  • তাপ সহনশীল বোতাম মাশরুম।
  • সীতাকে মাশরুম।
  • খড় মাশরুম।

মাশরুমের চাষ পদ্ধতি ও জাতঃ

ঝিনুক মাশরুম । বাংলাদেশে বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে ঝিনুক মাশরুমে চাষ বেশি প্রচলিত আছে বলে জানা যায়। চাষীদের জন্য স্পন ভর্তি সাবটেক্সট সহ উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত পিপি ব্যাগ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। সরবরাহকৃত এসব ব্যাগ থেকে চাষিরা ফসল উৎপাদন করে থাকেন। মোটামুটি ৫০০ গ্রাম ওজনের এসব ব্যাগের ভিতর উৎপাদন হচ্ছে। যেমনঃ-
  • কাঠের গুড়া 64%
  • গমের ভুষি ৩২%
  • ধানের শীষ ৪% 
  • উক্ত মিশ্রণের সাথে সামান্য পরিমাণ চুন এবং পানি মিশানো হয়। প্যাকেট গুলো খড়ের চাষা বিশিষ্ট বাঁশের বেড়া ও পাকা মেঝের ঘরে কাঠ ও বাঁশের তাকে সারি করে সাজিয়ে রাখতে হবে। অতঃপর ব্যাগের দুপাশে অর্ধচন্দ্রাকৃতির করে কেটে কাঁটা অংশটি খানিকটা চেযছে ফেলতে হবে।
  • চাচার পর ব্যাগটি পরিষ্কার পানিতে ২১ থেকে ত্রিশ মিনিট ভিজিয়ে অথবা ডুবিয়ে রাখতে হবে।
  • ব্যাগটি অতঃপর পরিষ্কার ফ্লোর বা তারের জালের উপর আধা ঘন্টা সময় উল্টিয়ে রাখতে হবে যাতে ভেতরের বাড়তি পানি ঝরে যায়। এবার চাষ ঘরে কাঠেরবাগ বা বাসের মাচায় পরিমিত বিছিয়ে ব্যাগগুলো তার ওপর সারিবদ্ধ ভাবে রাখতে হবে।
  • বাইরে তাপমাত্রা কম থাকলে ব্যাগের উপর পলিথিন ঢেকে দিয়ে দুই থেকে তিন দিন রাখতে হবে যাতে ব্যাগের ভেতরে তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
  • এ সময়ে ঘরের আদ্রতা আশি পারসেন্ট এবং তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩০০ সেন্টিমিটার হওয়া দরকার। ধারণা দিয়ে ব্যাগগুলোতে নিয়মিত পানি স্প্রে করতে হবে।
  • পলিথিন ঢাকা থাকলে ৩/৪ বা ১০ থেকে ১৫ দিন সময় ডাক না সরিয়ে বাতাস চলাচলে ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
  • দুই বাই ৩ দিন পর মাশরুম বড় হলে সংগ্রহ করতে সক্ষম হবে।
  • দুই থেকে তিন দিন পর ব্যাগের কাটা অংশে দিয়ে সাদা পিন সাদৃশ্য অংশ দেখা যায় এরকম আরো দুই থেকে তিন দিন পর মাশরুম বড় হলে সংগ্রহ করতে হবে।
  • অন্য দু'পাশ থেকে অতঃপর একই ভাবে ছেচে দিয়ে পানি স্প্রে করলে নতুন ভাবে মাছ উৎপাদন করা অসম্ভব বলে কোন কিছু নাই। একটি মাশরুম এর ব্যাগ থেকে তিন অথবা চার বার ফসল তোলা যেতে পারে।

মাশরুম চাষে পোকামাকড় ও রোগ বালাই দমন প্রক্রিয়াকরণঃ

মাশরুম চাষের জন্য পোকামাকড় ও রোগ বালাই দমন মাশরুমের মাছি প্রকোপ দেখা দিতে পারে। এইজন্য মালাথিয়ন 0.1% স্প্রে করা যেতে পারে এছাড়া ফরমালি ডিহাইড্রেট চার পার্সেন্ট তোলা ভিজিয়ে ঘষে দিলে সবুজ বাদামি ও নির্মল মোল্ড দূর করা সম্ভব।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url